ছবি : ইন্টারনেট
ধর্ম নিয়ে অনেক ইতিহাস বয়ে গেছে। ধর্ম মানুষের জীবন ও মনে ওতপ্রোতভাবে মিশে আছে। পৌত্তলিকতা এক সময় মানুষের জীবনে প্রভাব বিস্তার করেছিল। তারপর এলো একেশ্বরবাদের জয়-জয়কার। এখন সময় এসেছে মানবতাবাদের। মানবতাই মানুষের ধর্ম, অন্য কিছু নয়। মানবতাবাদই পারে মানুষে-মানুষে বিভেদ, সাম্প্রদায়িকতা, হানাহানি, ঘৃণা-বিদ্বেষ দূর করতে। মানবতাবাদই পারে অন্ধত্ব ঘুচিয়ে মানুষকে আলোকিত করতে, আধুনিক করতে; জীবনকে আনন্দময় করতে; সত্য ও সুন্দরকে বুঝতে। লালন ফকির সাহসিকতা ও যুক্তির মাধ্যমে প্রচলিত ধর্মকে অসার সত্য ধারণে অক্ষম প্রতিপন্ন করে মানবতাবাদ তথা মানব ধর্মের জয়গান গেয়েছেন। এ জন্য লালনকে মানব ধর্মের প্রবর্তক হিসেবে গণ্য করা যায়। লালন ছিলেন একজন যুক্তিবাদী, মানবতাবাদী ও আধুনিক মানুষ। লালনই জাতি-ধর্ম-বর্ণের ঊর্ধ্বে উঠে মানুষের জয়গান গেয়েছেন; মানুষের মুক্তির কথা বলেছেন।
একাধারে একজন আধ্যাত্মিক ফকির সাধক, মানবতাবাদী, সমাজ সংস্কারক এবং দার্শনিক। তিনি অসংখ্য গানের গীতিকার, সুরকার ও গায়ক ছিলেন। লালনকে ফকিরি গানের অগ্রদূতদের অন্যতম একজন হিসেবে বিবেচনা করা হয় এবং ‘। তার গানের মাধ্যমেই উনিশ শতকে বেশ জনপ্রিয়তা অর্জন করে।
লালন ছিলেন একজন মানবতাবাদী সাধক। যিনি ধর্ম, বর্ণ, গোত্রসহ সকল প্রকার জাতিগত বিভেদ থেকে সরে এসে মানবতাকে সর্বোচ্চ স্থান দিয়েছিলেন। অসাম্প্রদায়িক এই মনোভাব থেকেই তিনি তার গান রচনা করেছেন। তার গান ও দর্শন যুগে যুগে প্রভাবিত করেছে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজী নজরুল ও অ্যালেন গিন্সবার্গের মতো বহু খ্যাতনামা কবি, সাহিত্যিক, দার্শনিক, বুদ্ধিজীবীসহ অসংখ্য মানুষকে। তার গানগুলো যুগে যুগে বহু সঙ্গীতশিল্পীর কণ্ঠে লালনের এই গানসমূহ উচ্চারিত হয়েছে। গান্ধীরও ২৫ বছর আগে, ভারত উপমহাদেশে সর্বপ্রথম, তাকে ‘মহাত্মা’ উপাধি দেয়া হয়েছিল।
মানব সমাজের জন্য হিতকারী এ মহান মানবের প্রয়ান দিবসে রইলো শ্রদ্ধার্ঘ