বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪ , ১৩ চৈত্র ১৪৩০

modhura
Aporup Bangla

সরকার সম্মানী কমাতে চায় সিইসি-ইসির

জাতীয়

অপরূপ বাংলা প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১২:০৫, ৩০ নভেম্বর ২০২২

সর্বশেষ

সরকার সম্মানী কমাতে চায় সিইসি-ইসির

প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল

ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণে দেড়ঘণ্টার সেশন বাবদ প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনাররা ৭ হাজার ৫০০ টাকা পেয়ে আসলেও সে টাকা দিতে নারাজ অর্থ মন্ত্রণায়। সাংবিধানিক দায়িত্ব পালনে প্রিভিলাইজ অ্যাক্ট অনুযায়ী সুবিধাপ্রাপ্ত হন বিধায় তাদের এই সম্মানীতে অসম্মতি দিয়েছে মন্ত্রণালয়।

দেশের অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলায় সরকার ঘোষিত ব্যয় সংকোচন নীতিতে এবার প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) ও নির্বাচন কমিশনারদের (ইসি) সম্মানী কর্তন করছে সরকার। ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণে দেড় ঘণ্টার সেশন বাবদ প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনাররা ৭ হাজার ৫০০ টাকা পেয়ে আসলেও সে টাকা দিতে নারাজ অর্থ মন্ত্রণায়।

সাংবিধানিক দায়িত্ব পালনে প্রিভিলাইজ অ্যাক্ট অনুযায়ী সুবিধাপ্রাপ্ত হন বিধায় তাদের এই সম্মানীতে অসম্মতি দিয়েছে মন্ত্রণালয়। তবে বিদায়ী কে এম নূরুল হুদা কমিশনের সবাই এ বাবদ সম্মানী পেয়েছেন। নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা বলছেন, অর্থ মন্ত্রণালয় ভুলবশত এই চিঠি দিয়েছে।

হাইকোর্টের বিচারকরা যেমন সম্মানী পেয়ে থাকেন ঠিক তেমনি নির্বাচন কমিশনাররা এটা পাবেন। এ ছাড়া আরও বিভিন্ন খাতে প্রশিক্ষণার্থীদের প্রশিক্ষণ ভাতা অর্ধেক কমিয়ে ১ হাজার টাকা থেকে ৫০০ টাকা করা হয়েছে। কোর্স পরিচালক, কোর্স সমন্বয়ক ও সহযোগী কর্মচারীদের ক্ষেত্রে রুটিন কাজ হওয়ায় টাকা ছাড় করতে রাজি হয়নি মন্ত্রণালয়।

সম্প্রতি নির্বাচন কমিশনে পাঠানো অর্থ মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব নারগিস মুরশিদ স্বাক্ষরিত এক চিঠি থেকে এ সব তথ্য জানা যায়। ভোটগ্রহণ কাজে কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণে প্রশিক্ষক সম্মানী ও প্রশিক্ষণ ভাতা নির্ধারণের জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়েছিল ইসি। তারই জবাবে এ চিঠি দেয় অর্থ মন্ত্রণালয়। নির্বাচন কমিশনের অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘অর্থ মন্ত্রণালয়ের এ রকম একটি চিঠি আসছে। ওরা ভুলবশত দিয়েছে। কমিশনাররা সম্মানী পাবেন। অর্ডার সংশোধনের জন্য আমরা আরেকটা চিঠি দিয়েছি।

 তিনি বলেন, ‘হাইকোর্টের বিচারকরা যেমন সম্মানী পান৷ কমিশনাররাও তেমন সম্মানী পাবে। আমরা আবার চিঠি দেব অর্থ মন্ত্রণালয়ে। তাদের সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে।’ ব্যয় সংকোচনের কারণে এমন সিদ্ধান্ত প্রশিক্ষণ দেয়ার ক্ষেত্রে বাধা সৃষ্টি হবে কি না জানতে চাইলে অশোক কুমার দেবনাথ বলেন, ‘বাংলাদেশে সার্বিক অবস্থা বিবেচনা করেই হয়তো বা এমন হয়েছে।

তবে এতে প্রশিক্ষণ বাধাগ্রস্থ হবে না। আনুষাঙ্গিক খরচ কিছুটা কমতে পারে।’ প্রতি দেড়ঘণ্টা সেশনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্য কমিশনারদের জন্য প্রশিক্ষক সম্মানী ৭ হাজার ৫০০ টাকা নির্ধারণ করলেও সেক্ষেত্রে কোনো অর্থ খরচ করতে চায় না অর্থ মন্ত্রণালয়। এছাড়া জ্যেষ্ঠ সচিব, সচিব ও অতিরিক্ত সচিবদের প্রতি দেড়ঘণ্টা সেশনে সম্মানী বাবদ নির্বাচন কমিশন ৫ হাজার টাকা চাইলেও অর্থ মন্ত্রণালয় দুই হাজার টাকা কেটে তা তিন হাজার টাকা করে দিয়েছে। যুগ্মসচিব বা সমপর্যায়ের কর্মচারীদের তিন হাজার টাকার জায়গায় এক হাজার কমিয়ে দুই হাজার টাকা করা হয়েছে।

এছাড়া উপ-সচিব ও সমপর্যায়ের কর্মীদের দুই হাজার টাকা থেকে কমিয়ে দেড় হাজার টাকা করার সিদ্ধান্ত জানিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়। প্রশিক্ষণার্থীদের প্রশিক্ষণ ভাতা অর্ধেক কমিয়ে এক হাজার টাকা থেকে ৫০০ টাকা করা হয়েছে। এছাড়া কোর্স পরিচালক, কোর্স সমন্বয়ক ও সহযোগী কর্মচারীদের ক্ষেত্রে রুটিন কাজ হওয়ায় টাকা ছাড় করতে রাজি হনি অর্থ মন্ত্রণালয়। অন্যদিকে নির্বাচন কমিশন তাদের চিঠিতে কোর্স পরিচালকের সম্মানী ছয় হাজার টাকা, সমন্বয়কদের পাঁচ হাজার টাকা চায়।

সহযোগীদের দিনপ্রতি ৫০০ টাকা চেয়েছিল তারা। প্রশিক্ষণার্থীদের চা নাস্তা বাবদ খরচ না কমালেও দুপুরের খাবার বাবদ ১০০ টাকা কমাতে চায় অর্থ মন্ত্রণালয়। এছাড়া প্রশিক্ষণ সামগ্রী বাবদ জনপ্রতি ১০০ টাকা খরচের জায়গায় ৫০ টাকা, উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের খরচ ৫ হাজার টাকা থেকে কমিয়ে তিন হাজার টাকা সম্মতি দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়৷ ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ভোটগ্রহণে সহায়ক কর্মচারীদের সফটওয়্যার বিষয়ক প্রশিক্ষণের ক্ষেত্রে সিস্টেম ম্যানেজারদের প্রশিক্ষণ সম্মানী আড়াই হাজার থেকে কমিয়ে দুই হাজার টাকা, সিনিয়র সিস্টেম এনালিস্টদের ক্ষেত্রে দুই হাজার থেকে কমিয়ে দেড় হাজার টাকা করা হয়েছে। প্রশিক্ষণার্থীদের চা নাস্তা বাবদ খরচ না কমালেও দুপুরের খাবার বাবদ ১০০ টাকা কমাতে চায় অর্থ মন্ত্রণালয়।

যেসব শর্ত অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রিজাইডিং অফিসার, সহকারি প্রিজাইডিং অফিসার ও পোলিং অফিসারদের ব্যালট এবং ইভিএমের ভোটগ্রহণের বিষয়ে একত্রে বা আলাদাভাবে ভোটগ্রহণ করা যাবে। একজন প্রশিক্ষক একাধিক প্রশিক্ষণ কর্মসূচীতে অংশ নিলেও দিনে দুইটার বেশি সম্মানী পাবেন না। এ খাতে বরাদ্দ অর্থ থেকে এ ব্যয় নির্বাহ করতে হবে, এ বাবদ অতিরিক্ত বরাদ্দ দাবি করা যাবে না। এ অর্থ ব্যয়ে যাবতীয় আর্থিক বিধান যথাযথভাবে পালন করতে হবে। প্রাপ্যতা নিশ্চিত হয়ে সম্মানী প্রদান করতে হবে। ব্যয়ে কোনো অনিয়ম দেখা দিলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকবে। আদেশ জারির পর থেকে এ হার কার্যকর হবে।

এনসি/

সর্বশেষ