শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪ , ১৪ চৈত্র ১৪৩০

modhura
Aporup Bangla

বীমা শিল্পের উন্নয়নে  অনন্য ভুমিকা রেখেছিলেন বঙ্গবন্ধু

মতামত

সৌমিত্র দেব

প্রকাশিত: ১১:০৯, ৬ মার্চ ২০২৩

সর্বশেষ

বীমা শিল্পের উন্নয়নে  অনন্য ভুমিকা রেখেছিলেন বঙ্গবন্ধু

ছবি সংগ্রহ

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এ দেশের বীমা শিল্পে অনন্য ভুমিকা রেখেছিলেন। তিনি রাজনীতির বাইরে এই পেশাকেই শুধু মাত্র বেছে নিয়েছিলেন ।
তিনি ১৯৬০ সালের ১ মার্চ আলফা ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডে একজন উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তা হিসেবে যোগদান করেছিলেন। সেই দিনটি স্মরণে প্রতিবছর বাংলা দেশে ১ মার্চ জাতীয় বীমা দিবস হিসেবে পালন করা হয়।এর একটা প্রেক্ষাপট ও ছিল।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘনিষ্ঠজন ছিলেন  আওয়ামীলীগ নেতা মুহিবুস সামাদ । তিনি একজন বীমাবিদ ছিলেন। ১৯৫৪   সালের  নির্বাচনে তিনি  যুক্তফ্রন্ট থেকে   কুলাউড়ায় নৌকা মার্কার প্রার্থী হয়েছিলেন। বিপুল ভোটে পরাজিত করেছিলেন পাকিস্তানের মন্ত্রী নবাব আলী হায়দার খানকে ।
পরবর্তীকালে ১৯৫৯ সালের ৭ আগস্ট প্রেসিডেন্ট আইয়ুব খান (EBDO) জারি করে আওয়ামী লীগের রাজনীতি বন্ধ করে দিলেন। একই সাথে ১৯৫৯ সালের ৭ ডিসেম্বর শেখ মুজিবুর রহমান জামিনে মুক্তি পাওয়ার সময় শর্ত আরোপ করা হয় যে ঢাকার বাইরে গেলে স্থানীয় পুলিশকে অবহিত করতে হবে। বঙ্গবন্ধু মার্শাল ‘ল এড়িয়ে রাজনৈতিক কর্মকান্ড চালিয়ে যাবার পথ খুঁজতে লাগলেন। অবশেষে পথ খুঁজে পেলেন। 
১৯৬০ সালে ১ মার্চ আলফা ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিতে কন্ট্রোল অব এজেন্সি হলেন। বীমার কাজের সাথে গোপনে রাজনৈতিক কর্মকান্ড চালিয়ে গেলেন।
১৯৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর বীমা শিল্পের উন্নয়নে বঙ্গবন্ধু কিছু নতুন পদক্ষেপ গ্রহন করেন। বাংলাদেশ সরকার ২৯টি পাকিস্তানি কোম্পানিকে তদাররি করার জন্য ১৯৭২ সালের ৩ জানুয়ারি ঞযব ইধহমষধফবং (ঞধশরহম ড়াবৎ ড়ভ পড়হঃৎড়ষ ধহফ সধহধমবসবহঃ রহফঁংঃৎরধষ ধহফ পড়সসবৎপরধষ পড়হপবৎহ) ঙৎফবৎ,১৯৭২ নামে একটি অধ্যাদেশ জারী করে উক্ত অধ্যাদেশের ২(১) এর বিধান মোতাবেক প্রশাসক নিয়োগ দেয়া হয়।

১৯৭২ সালের ২৬ মার্চ Bangladesh Insurance ( Emergency Provision) Order,১৯৭২ জারি করা হয়। এ অপঃ এর বিধান অনুযায়ী বাংলাদেশের বীমা আইন হিসাবে ১৯৩৮ সালের বীমা আইনটিকে মূলভিত্তি হিসাবে বিবেচনা করা হয়। পরবর্তীতে ১৯৭২ সালের ৮ আগস্ট রাষ্ট্রপতির আদেশ নং(৯৫) অনুযায়ী দেশের বীমা প্রতিষ্ঠানগুলোকে জাতীয়করণ করা হয়। ওই আদেশে দেশের ৭৫টি বীমা প্রতিষ্ঠানকে প্রথমে ৫টি সংস্থায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়। অতপর ১৯৭৩ সালের ১৪ মে বীমা কর্পোরেশন অধ্যাদেশ ১৯৭৩ (Insurance Corporation Ordinance 1973) মাধ্যমে উক্ত পাচঁটি বীমা সংস্থাকে দুটি সংস্থার অধীনে আনা হয়। একটি হলো জীবন বীমা কর্পোরেশন এবং অন্যটি হলো সাধারন বীমা কর্পোরেশন। বাংলাদেশে বর্তমানে ৭৯ বীমা কোম্পানি রয়েছে । তার মধ্যে সাধারণ বীমা কোম্পানি ৪৪টি এবং জীবন বীমা কোম্পানি ৩৫টি রয়েছে।
সেই সঙ্গে দিবসটিকে ‘খ’ শ্রেণী থেকে ‘ক’ শ্রেণীতে উন্নীত করা বীমা শিল্পের জন্য অত্যন্ত গৌরবের বিষয়। বীমাকে সাধারণ জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য ও আকর্ষণীয় করে তুলতে নিঃসন্দেহে জাতীয় বীমা দিবস গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। আমরা আইডিআরএর নির্দেশনা মতে, ১ থেকে ১৫ মার্চ পর্যন্ত ‘বীমা সেবা পক্ষ’ পালনের উদ্যোগ নিয়েছি। বিভিন্ন বীমা কোম্পানির পক্ষ থেকেও মার্চব্যাপী বীমা সম্পর্কিত সভা, সেমিনার, মিডিয়ায় প্রচার-প্রচারণা, বীমা দাবি দ্রুত নিষ্পত্তি বিষয়ে কর্মসূচির আয়োজন করা হলে জনমনে আরো ইতিবাচক পরিবর্তন পরিলক্ষিত হবে। এসব কর্মসূচির মাধ্যমে বীমা কার্যকারিতা ও সুফল সম্পর্কে জনগণকে অধিকতর সচেতন করা যাবে, গ্রাহক সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে এবং ফলে দেশের অর্থনীতিতে বীমা পেনিট্রেশন বাড়বে। এ বছর জাতীয় বীমা দিবসের প্রতিপাদ্য ‘আমার জীবন আমার সম্পদ, বীমা করলে থাকবে নিরাপদ।’

জা. ই

সর্বশেষ