ছবি-সংগৃহীত
আগামীকাল বুধবার (৪ জানুয়ারি) গাইবান্ধা-৫ (সাঘাটা-ফুলছড়ি) আসনের উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। সোমবার (২ জানুয়ারি) মধ্যরাত থেকে এই নির্বাচনী প্রচারণা শেষ হয়েছে। এদিকে ভোটগ্রহণে নির্বাচন কমিশন ও প্রশাসনের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। মঙ্গলবার (৩ জানুয়ারি) সকালে ফুলছড়ি ও সাঘাটা উপজেলা নির্বাচন কার্যালয় থেকে ভোটগ্রহণের ইভিএমসহ নির্বাচনি সকল সরঞ্জাম সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রের প্রিজাইডিং কর্মকর্তাদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
অনেক প্রিজাইডিং কর্মকর্তা আইন-শৃংখলা বাহিনী ও ভোটগ্রহণ সহযোগী কর্মকর্তাসহ এর মধ্যেই (বিকালে) সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রে পৌঁছে ভোটগ্রহণের জন্য কেন্দ্র প্রস্তুত করেছেন। জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আবদুল মোত্তালিব বলেন, সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠানে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। এ উপনির্বাচনে পাঁচজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন।
তারা হচ্ছেন, আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মাহমুদ হাসান রিপন, জাতীয় পার্টি (জাপা) মনোনীত এএইচএম গোলাম শহীদ রঞ্জু, বিকল্পধারা মনোনীত জাহাঙ্গীর আলম, স্বতন্ত্র প্রার্থী নাহিদুজ্জামান নিশাত এবং সৈয়দ মাহবুবুর রহমান। তবে গত ২৫ ডিসেম্বর স্বতন্ত্র প্রার্থী আলহাজ্ব নাহিদুজ্জামান নিশাদ বগুড়া প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলন করে ভোট কারচুপির আশঙ্কায় এই নির্বাচন থেকে তিনি সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, এ উপনির্বাচনে ১৪৫টি কেন্দ্রের ৯৫২টি বুথে ইভিএম-এ ভোটগ্রহণ করার জন্য ১৪৫ জন প্রিজাইডিং কর্মকর্তা, ৯৫২ জন সহকারী প্রিজাইডিং কর্মকর্তা ও এক হাজার ৯০৪ জন পোলিং কর্মকর্তা দায়িত্ব পালন করছেন। মোট ভোটার তিন লাখ ৩৯ হাজার ৯৮ জন। ফুলছড়ি থানার ওসি কাওসার আলী বলেন, নিরাপত্তার জন্য প্রতি কেন্দ্রে দুইজন পুলিশ কর্মকর্তাসহ ৪ জন পুলিশ সদস্য এবং ১২ জন আনছার ও ভিডিপি দায়িত্ব পালন করছেন। তবে তার উপজেলার চরাঞ্চলের ১০টি কেন্দ্রে ১০ করে পুলিশ সদস্য ও ১৬ জন করে আনছার ও ভিডিপি দায়িত্ব পালন করবেন।
সাঘাটা থানার ওসি জানান, তার উপজেলার চরাঞ্চলের ৩টি কেন্দ্রে ১০ করে পুলিশ সদস্য ও ১৬ জন করে আনছার ও ভিডিপি দায়িত্ব পালন করবেন। গাইবান্ধার পুলিশ সুপার কামাল হোসেন বলেন, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে সকল প্রস্তুতি পুলিশ প্রশাসনের রয়েছে। র্যাবের ৯টি টিম, ৪ প্লাটুন বিজিবি, এবং অস্ত্রধারী আনসার সদস্য ছাড়াও ১ হাজার ২৮৫ জন পুলিশ নিরাপত্তা প্রদানে দায়িত্ব পালন করছেন। গাইবান্ধা জেলা প্রশাসক অলিউর রহমান বলেন, গাইবান্ধা-৫ আসনটি ফুলছড়ি ও সাঘাটা উপজেলার ১৭টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত। প্রতি ইউনিয়নে একজন করে মোট ১৭ জন নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট ও দুইজন জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট দায়িত্ব পালন করছেন।
এই উপনির্বাচনের নির্বাচন রিটার্নিং কর্মকর্তা ও ঢাকা আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা ফরিদুল ইসলাম জানান, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোট গ্রহণের জন্য সব ধরনের প্রস্তুতির পাশাপাশি ১৪৫টি ভোট কেন্দ্রে ১ হাজার ২৪২টি সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। যা পর্যবেক্ষণের জন্য উচ্চ পর্যায়ের মনিটরিং সেল গঠন করেছে নির্বাচন কমিশন।
এদিকে গাইবান্ধা-৫ (সাঘাটা-ফুলছড়ি) আসনের সংসদ-সদস্য ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী গত ২৩ জুলাই মারা যান। নির্বাচন কমিশন আসনটি শূন্য ঘোষণার পর গত ১২ অক্টোবর উপনির্বাচনের দিন ধার্য হয়। কিন্তু ভোটগ্রহণের দিন অনিয়ম করায় ভোট গ্রহণ স্থগিত করা হয়। এই অনিয়ম তদন্ত করার জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়। তদন্ত কাজ শেষে গত ৬ নভেম্বর পুনরায় আগামী ৪ জানুয়ারি গাইবান্ধা-৫ আসনের উপনির্বাচনে তারিখ ঘোষণা দেন নির্বাচন কমিশন।
এনসি/
