বৃহস্পতিবার, ১০ অক্টোবর ২০২৪ , ২৪ আশ্বিন ১৪৩১

modhura
Aporup Bangla

সুদান থেকে ফিরলেন আরও ২৩৯ বাংলাদেশি

সারাবিশ্ব

অপরূপ বাংলা প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৩:৫০, ১২ মে ২০২৩

আপডেট: ১৩:৫১, ১২ মে ২০২৩

সর্বশেষ

সুদান থেকে ফিরলেন আরও ২৩৯ বাংলাদেশি

ছবি সংগ্রহ

যুদ্ধকবলিত সুদান থেকে সৌদি আরবের জেদ্দা হয়ে দেশে ফিরেছেন আরও ২৩৯ প্রবাসী বাংলাদেশি। শুক্রবার (১২ মে) সকাল ৯টায় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইট তাদের নিয়ে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। এ নিয়ে পাঁচ ধাপে ৫৫৫ জন বাংলাদেশি সুদান থেকে দেশে ফিরলেন। তাদের মধ্যে নারী, শিশু ও অসুস্থ প্রবাসী রয়েছেন।

সুদানফেরত এসব বাংলাদেশিকে প্রথমে দেশটির রাজধানী খার্তুম থেকে পোর্ট সুদানে নিয়ে আসা হয়। পরে সেখান থেকে তাদের জেদ্দা অভিমুখী জাহাজ ও সৌদির সামরিক বিমানে সেখানে পাঠানো হয়। জেদ্দায় বাংলাদেশ দূতাবাস এই প্রবাসীদের থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করে।
গত সোমবার (৮ মে) যুদ্ধকবলিত সুদান থেকে জেদ্দা হয়ে প্রথম দফায় দেশে ফেরেন ১৩৬ বাংলাদেশি। বিমান বাংলাদেশের একটি ফ্লাইটে তারা দেশে ফেরেন। এরপর গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে ৫১ জন এবং পরে একই দিন সন্ধ্যায় ৫৪ জন এবং রাতে ৭৫ জন দেশে ফেরেন।

তারা সবাই বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ফ্লাইটে জেদ্দা হয়ে দেশে ফিরেছেন বলে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সূত্রে জানা গেছে।গত ৩ মে সুদানের রাজধানী খার্তুম থেকে ৬৮০ বাংলাদেশিকে ১৩টি বাসে করে নিরাপদে পোর্ট সুদানে নেওয়া হয়।বিমান

প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, সুদানে প্রায় দেড় হাজার বাংলাদেশি নাগরিক বসবাস করেন। তাদের মধ্যে যারা দেশে আসার জন্য নিবন্ধন করেছেন পর্যায়ক্রমে সবাইকে দেশে ফিরিয়ে আনা হবে।
এদিকে গত ৮ মে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স জানিয়েছে, সংঘাতপূর্ণ সুদানে আটকে পড়া সব বাংলাদেশিকে দেশে ফিরিয়ে আনবে বিমান। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে সমন্বয় করে ধাপে ধাপে সুদান থেকে বাংলাদেশিদের দেশে ফিরিয়ে আনা হবে।

গত ৩ মে সুদানে আটকে পড়া ৬৮০ বাংলাদেশি দেশটির রাজধানী খার্তুম থেকে পোর্ট সুদান বন্দরে পৌঁছান। ওইদিন সকালে তাদের বহনকারী ১৩টি বাস বন্দরে পৌঁছায়। আগের দিন ২ মে বাসগুলো ৬৮০ বাংলাদেশিকে নিয়ে খার্তুম থেকে পোর্ট সুদানের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। বন্দরে পৌঁছানোর পর দেখা যায়, অনেক বাংলাদেশির পাসপোর্ট নেই। সেক্ষেত্রে নতুন করে তাদের ট্রাভেল ডকুমেন্ট তৈরি করতে হয়।
জানা যায়, পোর্ট সুদান থেকে জেদ্দায় ফেরার জন্য ৬৮০ বাংলাদেশি অপেক্ষায় ছিলেন। ট্রাভেল পারমিট ইস্যু ও জাহাজের শিডিউল পেতে দেরি হওয়ায় তারা জেদ্দায় পৌঁছাতে পারছিলেন না।

আফ্রিকার তৃতীয় বৃহত্তম দেশ সুদানে গত ১৫ এপ্রিল থেকে সেনাবাহিনী ও প্যারামিলিটারি র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সের (আরএসএফ) মধ্যে যুদ্ধ চলছে। এতে এখন পর্যন্ত অন্তত চারশোর বেশি মানুষের প্রাণহানি হয়েছে। যাদের মধ্যে জাতিসংঘ কর্মী ও মিশরের সহকারী প্রতিরক্ষা উপদেষ্টাও রয়েছেন। তবে নিহতের প্রকৃত সংখ্যা এর চেয়েও অনেক বেশি হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

সুদানে প্রায় দেড় হাজারের মতো বাংলাদেশি রয়েছেন। এরমধ্যে রাজধানী খার্তুমেই প্রায় ১ হাজার ২০০ বাংলাদেশির বাস। যুদ্ধকালীন প্রায় ৭০০ বাংলাদেশি দেশে ফেরত আসার ইচ্ছা প্রকাশ করেন।

চলমান যুদ্ধে সুদানে চিকিৎসাসেবা, পানি ও বিদ্যুৎ সরবরাহ অব্যাহতভাবে বিঘ্নিত হওয়া এবং খাদ্যের মজুত ফুরিয়ে আসায় মানবিক সংকট দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। বিদেশি রাষ্ট্রগুলো আরও আগেই তাদের নাগরিক ও কূটনীতিকদের নিজ দেশে ফিরিয়ে নেওয়ার কার্যক্রম শুরু করেছে।

২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে সামরিক অভ্যুত্থানের পর থেকে শীর্ষ দুই সামরিক নেতার কাউন্সিলের মাধ্যমে সুদানের রাষ্ট্র পরিচালনা হচ্ছে। তারা হলেন- সুদানের সেনাবাহিনীর প্রধান ও প্রেসিডেন্ট জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান এবং দেশটির উপ-নেতা ও আরএসএফ কমান্ডার জেনারেল মোহামেদ হামদান দাগালো।

ভবিষ্যৎ রাষ্ট্র পরিচালনার রূপরেখা ও দেশটিতে বেসামরিক শাসন ফেরানোর প্রস্তাব ইস্যুতে এ দুই নেতার বিরোধ ঘিরেই গত ১৫ এপ্রিল সকাল থেকে যুদ্ধের সূত্রপাত। তবে কোন পক্ষ প্রথম আঘাত হেনেছে, সেটি এখনো স্পষ্ট নয়।

জা. ই

সর্বশেষ

জনপ্রিয়