বৃহস্পতিবার, ০৯ মে ২০২৪ , ২৫ বৈশাখ ১৪৩১

modhura
Aporup Bangla

সগিরা মোর্শেদ হত্যা: দুইজনের যাবজ্জীবন, তিনজন খালাস

আইন আদালত

অপরূপ বাংলা প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১২:০৩, ১৩ মার্চ ২০২৪

সর্বশেষ

সগিরা মোর্শেদ হত্যা: দুইজনের যাবজ্জীবন, তিনজন খালাস

ছবি সংগ্রহ

তিন দশকের বেশি সময় আগে ঢাকার ভিকারুননিসা নূন স্কুলের সামনে সগিরা মোর্শেদ সালাম খুনের ঘটনায় হওয়া মামলায় দুই আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এছাড়া অপর তিন আসামিকে খালাস দেওয়া হয়। বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) ঢাকার বিশেষ দায়রা জজ আলী হোসেন এ রায় দেন। বাদীপক্ষের আইনজীবী ফারুক আহাম্মদ এসব তথ্য নিশ্চিত করেন। দণ্ডপ্রাপ্ত দুই আসামি হলেন- নিহতের শ্যালক আনাছ মাহমুদ রেজওয়ান ও মারুফ রেজা। আর খালাস পেয়েছেন সগিরা মোর্শেদের ভাসুর ডা. হাসান আলী চৌধুরী, জা সায়েদাতুল মাহমুদা ওরফে শাহিন ও মন্টু মন্ডল ওরফে কুঞ্জ চন্দ্র মন্ডল। জানা গেছে, রায় ঘোষণার সময় সব আসামিই আদালতে উপস্থিত ছিলেন। সাজা পরোয়ানা দেওয়ার পর দুই আসামিকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

এর আগে গত ২৫ জানুয়ারি রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে রায়ের তারিখ ৮ ফেব্রুয়ারি ধার্য করেন। তবে ওই দিন রায় পিছিয়ে ২০ ফেব্রুয়ারি ধার্য করা হয়। ওইদিনও রায় প্রস্তুত না হওয়ায় তা পিছিয়ে আজ ১৩ মার্চ ধার্য করেন আদালত।

মামলাটিতে এখন পর্যন্ত ৫৭ জন সাক্ষীর মধ্যে ১৭ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ হয়েছে।

মামলার নথি অনুযায়ী, ১৯৮৯ সালের ২৫ জুলাই সগিরা মোর্শেদ সালাম রাজধানীর বেইলি রোডের ভিকারুননিসা নূন স্কুল থেকে দ্বিতীয় শ্রেণি পড়ুয়া মেয়ে সারাহাত সালমাকে আনতে যান। যাওয়ার পথে তিনি স্কুলের কাছাকাছি পৌঁছলে ছিনতাইকারীর কবলে পড়েন তিনি। আত্মরক্ষায় একপর্যায়ে সগিরা মোর্শেদ দৌড় দিলে তাকে গুলি করা হয়। পরে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়ার পথে সগিরা মোর্শেদ মারা যান।

ঘটনার দিনই রমনা থানায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মামলা করেন নিহত নারীর স্বামী সালাম চৌধুরী।

ঘটনার দীর্ঘ প্রায় ৩০ বছর পর গত ২০১৯ সালের ১৬ জানুয়ারি আদালতের জিআর শাখায় অভিযোগপত্র জমা দেন পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) পুলিশ পরিদর্শক রফিকুল ইসলাম। ২০২০ সালের ২ ডিসেম্বর আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জগঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত। এতে বলা হয়, মূলত পারিবারিক দ্বন্দ্ব থেকে হত্যার পরিকল্পনা করেন আসামিরা। পরিকল্পনামাফিক তা বাস্তবায়নের জন্য ভাড়াটে সন্ত্রাসী নিয়োগ দেওয়া হয়।

এ হত্যাকাণ্ডে প্রত্যক্ষদর্শী এক রিকশাচালক জড়িত দুজনের কথা বললেও মিন্টু ওরফে মন্টু নামের একজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়। ১৯৯১ সালের ১৭ জানুয়ারি মন্টুর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। নেওয়া হয় সাত জনের সাক্ষ্য। বাদীপক্ষের সাক্ষ্যে আসামি মন্টু ও তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মাহমুদুল হাসানের নিকটাত্মীয় মারুফ রেজার নামও আসে। সাক্ষ্যগ্রহণের সময় মারুফ রেজার নাম আসায় রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ১৯৯১ সালের ২৩ মে বিচারিক আদালত অধিকতর তদন্তের আদেশ দেন। এ আদেশের বিরুদ্ধে মারুফ রেজা হাইকোর্টে আবেদন করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে ১৯৯১ সালের ২ জুলাই হাইকোর্ট রুল দিয়ে অধিকতর তদন্তের আদেশ স্থগিত করেন। পরে স্থগিতাদেশের মেয়াদ বাড়ান। থমকে যায় মামলার কার্যক্রম।

বিষয়টি নজরে এলে ওই স্থগিতাদেশ প্রত্যাহারের উদ্যোগ নেয় রাষ্ট্রপক্ষ। শুনানি নিয়ে ২০১৯ সালের ২৬ জুন হাইকোর্ট মামলার অধিকতর তদন্তের আদেশে এর আগে দেওয়া স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করেন। একই সঙ্গে ৬০ দিনের মধ্যে ওই মামলার অধিকতর তদন্ত শেষ করতে পিবিআইকে নির্দেশ দেন। তদন্ত শেষে পিবিআই চার জনের বিরুদ্ধে ২০২০ সালের ১৪ জানুয়ারি আদালতে অভিযোগপত্র দেয়। একই বছরের ২ ডিসেম্বর আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরুর আদেশ দেওয়া হয়।

জ. ই

সর্বশেষ