শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪ , ১৪ চৈত্র ১৪৩০

modhura
Aporup Bangla

হাসান আজিজুল হক : ছোটগল্পের বরপুত্র

শিল্প-সাহিত্য

মামুন রশীদ

প্রকাশিত: ১২:৫৯, ৩০ নভেম্বর ২০২২

সর্বশেষ

হাসান আজিজুল হক : ছোটগল্পের বরপুত্র

অলংকরণ : জীবন শাহ

হাসান আজিজুল হকের জীবনদৃষ্টির বহুমুখিতা নিয়ে কথা বলা যায়। তার গল্পের বৈশিষ্ট্য নিয়ে কথা বলা যায়। কিন্তু এই লেখায় আমি সেদিকে যেতে আগ্রহী না। বাংলা ছোটগল্পের অনন্য কথাকার হাসান আজিজুল হকের সাহিত্যের নানা দিক নিয়ে অসংখ্য আলোচনা হয়েছে। বই হয়েছে, বিভিন্ন সাক্ষাৎকারে তার লেখার ভুবনের নানা দিক সাক্ষাতকারগ্রহণকারীদের প্রশ্নে উন্মোচিত হয়েছে। সদ্য প্রয়াত এই জীবনশিল্পীর লেখার সেইসব দিক নিয়ে কথা না বলে, তারই একটি কথা সূত্র ধরে আমি এ লেখায় শ্রদ্ধা জানাতে চাই। একজন লেখক কেন লেখেন, কিভাবে লেখেন এ একটি ভীষণ কৌতূহলী প্রশ্ন সাধারণের কাজে তো বটেই, অন্য লেখকেরও এক্ষেত্রে জানার আগ্রহ থাকে। কেন লিখি প্রসঙ্গে হাসান আজিজুল হক বলেছিলেন, ‘বেঁচে থাকার উপকরণ জোগাচ্ছে সমাজ। কেবলই নিতে থাকলে যে লজ্জা ও অপরাধবোধ জমা হতে থাকে, তা থেকেই লিখি’। এই লজ্জা ও অপরাধরোধে ভোগা হাসান আজিজুল হক বিশ্বাস করতেন, তিনি লেখার মাধ্যমে ঋণ শোধ করছেন। হাসান আজিজুল হক গল্পকার হিসেবে পরিচিত হলেও, উপন্যাস, ভ্রমণকাহিনি, স্মৃতিচারণা, প্রবন্ধ, শিশুসাহিত্য-সবই তিনি লিখেছেন। তাঁর নিজস্বতা রয়েছে অনুবাদক হিসেবেও। হাসান আজিজুল হকের লেখা গল্পগ্রন্থের মাঝে  রয়েছে- সমুুদ্রের স্বপ্ন শীতের অরণ্য, আত্মজা ও একটি করবী গাছ, জীবন ঘষে আগুন, নামহীন গোত্রহীন, পাতালে হাসপাতালে, আমরা অপেক্ষা করছি, রাঢ়বঙ্গের গল্প, রোদে যাবো, মা মেয়ের সংসার। শিশুদের জন্য লেখা গল্পের বই ফুটবল থেকে সাবধান এবং কিশোর উপন্যাস লালঘোড়া আমি উল্লেখযোগ্য। ভাষান্তরিত নাটক চন্দর কোথায়, গবেষণামূলক বই সক্রেটিস। হাসান আজিজুল হকের লেখা ভিন্নস্বাদের বই চালচিত্রের খুঁটিনাটি, একাত্তর : করতলে ছিন্নমাথা। প্রবন্ধের বইয়ের মধ্যে কথা সাহিত্যের কথকতা, অপ্রকাশের ভার ও অতলের আঁধি উল্লেখযোগ্য।


হাসান আজিজুল হক বহুপ্রজ লেখক ছিলেন না। তারপরেও তার আশি ঊর্ধ্ব জীবনে লেখালেখির সংখ্যা কম নয়। তাঁর রচনাসমগ্রের ভা-ার থেকে চালচিত্রের খুঁটিনাটি শিরোনামের গদ্য, বহুল পঠিত গল্প আত্মজা ও একটি করবী গাছ এবং রোদে যাবো গল্পগ্রন্থ থেকে ‘ভূতের কষ্ট’ গল্পটি পাঠকের সামনে হাজির করে, হাসান আজিজুল হকের লেখার মাধ্যমে ঋণ শোধের বিষয়টিকে স্পষ্ট করতে চাই। প্রথমেই দেখে নেই, চালচিত্রের খুঁটিনাটি গদ্যটি। চালচিত্রের খুঁটিনাটির লেখাগুলো প্রসঙ্গে হাসান আজিজুল হক বলেছেন, ‘বর্তমান সংকলনের রচনাগুলি গল্প প্রবন্ধ ভ্রমণকাহিনী ব্যক্তিগত রচনা ইত্যাদি কোনো বিশেষ শ্রেণীভুক্ত নয় অথচ এ সবেরই কিছু কিছু উপাদান লেখাগুলির মধ্যে মেশামেশি করে আছে। কবুল করছি যে এই লেখাগুলির বেশ কয়েকটি গল্পের বিকল্প হিশেবে রচিত হয়েছিল, কিছু বা প্রবন্ধের বদলে, তবে প্রত্যেকটি রচনার মূল লক্ষ্য ছিল লোকজীবনের ছবি তুলে আনা, সম্ভব হলে সমাজের গতি-প্রকৃতির হদিস দেওয়া।’
সেই হদিসের সন্ধান কেমন? আরেকবার চোখ বুলিয়ে নেওয়া যাক হাসান আজিজুল হকের ‘চালচিত্রের খুঁটিনাটি’ গদ্যটি। লেখার শুরুটা এভাবে, ‘ঢ়রিত্রের সন্ধানে নয়, কাহিনীর খোঁজেও নয়, খুব কাছ থেকে নজর করে মানুষ, তার জীবিকা আর যে জগতে সে আষ্টেপৃষ্ঠে আটক আছে তা দেখার জন্যে উত্তরাঞ্চলের একটি এলাকায় গিয়েছিলাম। মানুষের সঙ্গে যোগাযোগের আগেই দেখতে পাই, উত্তরাঞ্চলে বড় বড় মাঠ আছে, সেই মাঠে বন-জঙ্গল লতাপাতার তেমন বাড় নেই। সহজেই বুঝতে পারা যায়, এখানকার মাটি পুরনো। একটা উঁচু মাঠে, লালচে কাঁকরভর্তি মাটির উপর অনেকগুলো তালগাছ খুব কাছ থেকে দেখলাম। গাছগুলোর গুঁড়িতে প্রায় চোখ লাগিয়ে। মরচেধরা মোটা মোটা লোহার তারের রঙের শিকড় দিয়ে তারা ডালকুত্তার মতো মাটি কামড়ে ধরেছে। বেঁচে থাকার কি সাঙ্ঘাতিক পণ!’
এই প্রকৃতি পেরিয়ে, সাইকেলে চেপে জয়নুল আবেদীন বা কামরুল হাসানের আঁকা ছবির মতো পথ পেরিয়ে তিনি তার কাঙ্খিত গ্রামে পৌঁছলেন। সেখানে হাসান আজিজুল হক একজন মানুষের দেখা পেলেন, যে মানুষটি বেরিয়ে এল একটি গর্ত থেকে। গর্ত কেন? আবারও গদ্যটির একটি অংশ পাঠ করি। ‘সামনের একটি গর্ত থেকে একজন মানুষ আমাদের সামনে দাঁড়ায়। আমি এদেরই সন্ধানে এসেছি, কাজেই লোকাটিকে খুব কাছে থেকে দেখার দরকার মনে হয়। বলেছি, সে গত্য থেকে বেরিয়ে এল। কথাটা একটু অতিশয়োক্তি হয়ে গেলো বটে। কিন্তু সামনের উঁচু ভিটের একদিকের ঢালুর নিচে গড়ানে জায়গাটায় যে ঘরটি ছিলো, সেটাকে হঠাৎ আমার গর্ত বলেই ভ্রম হয়েছিলো। বড় আকারের দেশলাই বাক্সের মতো দেখতে, চারদিকের দেয়াল সাত ফুটের বেশি উঁচু হবে না। ঘরের মাথায় কিছু পুরনো পচা খড় আর শুকনো কাঠিখোঁচা কাাঁটজঙ্গল চাপানো আছে। ঘরের ভিতরে কি কি সামগ্রী আছে, চোখ বুজে বলে দেওয়া যায়। দুচারটি মাটির শানকি, কানাভাঙা কালো রঙের একটি মাটির কলসি, একটি বা দুটি মাদুরের অবশেষের মধ্যে গুটিয়ে রাখা শতচ্ছিন্ন কাঁথা। মোটামুটি সামগ্রী এই।’
এই যে মানুষটির দেখা পেলেন, সে কে? তিনি হলেন উত্তরাঞ্চলের চাষী। ভূমিহীন কৃষক। যার জন্ম কোনো এক বড় ঝড়ের সময়। লেখক ধরের নেন, সেটি ১৯১১ সাল। তাঁর জীবনের প্রথম স্মৃতি, যা সেই মানুষটি মনে করতে পারেন, তা হলো, ‘তিনি ক্ষেতে কাজ করছেন’। প্রশ্নের মাধ্যমে হাসান আজিজুল হক জেনে নেন, সেই ক্ষেত, যা সেই ক্ষেতমুজুরের স্মৃতিতে গেঁথে আছে, সেই ক্ষেতটির মালিক একজন মহাজন। এই ভূমিমুজুর যে ঘরটিতে থাকেন, যাকে প্রথম দেখায় গর্ত বলে মনে হয়েছিল, সেই গর্তটিও তার নিজের জায়গায় নয়। সেই গর্তেরও মালিক মহাজন। এই ক্ষেতমুজুরের সম্বল বলতে চার-পাঁচটি ছেলেমেয়ে। আর ঘরের ভেতরের সেই আসবাবপত্র, যার বর্ণনা, উপরের প্যারায় রয়েছে। এই  মানুষটি একসময় নিজে মহাজনের ক্ষেতে কাজ করেছে, আজ তার চার-পাঁচটি ছেলে-মেয়ে নিয়ে কাজ করছে। সে ‘মনিবের হাল বলদ নিয়ে জমি চষে, ফসল ফলায়, ফসল কাটে, ঝাড়ে এবং মনিবের গোলায় তুলে দিয়ে হাত ঝাড়া দিয়ে হালকা হয়।’ আর পুরো পরিবার নিয়ে এই উদয়াস্তত পরিশ্রমের যে বিনিময়, তাতে তার আক্ষরিক অর্থেই কয়েকটি মাস শুধু পেট ভরে। যাকে হাসান আজিজুল হক বর্ণনা করছেন, ‘পেট ভরে মানে, পেটই ভরে, জামকাপড় হয় না, তেল-নুন হয় না, ওষুধপত্র হয় না। কাজেই তাকে আবার মনিবের দরজায় গিয়ে দাঁড়াতে হয়। মনিবের ঋণ এ জন্মে সে শুধতে পারবে না।’
এই পুরুষানুক্রিমক আধুনিক ক্রীতদাস তাদেরই তো আমরা আরও বেশি বেশি পরিশ্রম করতে বলি, উঠে দাঁড়াতে বলি। অলস বলি। আমাদের সেই প্রশ্নে আমাদের লজ্জা লজ্জা করে কি-না সেই কথাটিকেই সোজাসাপ্টা ভাষায় হাসান আজিজুল হক বলেন, ‘এখন এদের আপনি বলুন আরও পরিশ্রম করো। এদের, বলুন, বাঙালি অলস জাত, পরিশ্রম না করলে এ জাতের উন্নতি নেই। বলা যাবে কথাটা? কেমন শোনাবে? বলতে একটু লজ্জা লজ্জা লাগবে না?’
আত্মজা ও একটি করবী গাছ গল্পটি সম্ভবত হাসান আজিজুল হকের সবচেয়ে পঠিত এবং আলোচিত গল্প। আত্মজা ও একটি করবী গাছের মধ্য দিয়ে দারিদ্র, ক্ষুধা, অক্ষমতা, পিতার অসহায়ত্ব, নিজের অস্তিত্বকে টিকিয়ে রাখতে সন্তানের শরীরকে বিকিয়ে দেবার মতো আত্মগ্লানিময় নিষ্ঠুরতা যা কোন আভরণ দিয়েই ঢেকে রাখা যায় না। রাজনীতি, দেশভাগ- যার অভিঘাতের শিকার হাসান আজিজুল হক নিজেও, সেই বাস্তবতার চালচিত্র উঠে এসেছে আত্মজা ও একটি করবী গাছের মধ্য দিয়ে। গল্পের বহুমাত্রিকতা,  বিষয়ের জটিলতা এবং সর্বপরি অভাবগ্রস্ত সমাজের চালচিত্র হাসান আজিজুল হকের কলমে যে নিস্পৃহভঙ্গিমায় উঠে এসেছে, সেই মর্মস্পর্শী হৃদয়বিদারী ঘঁনার আঘাত পাঠককে বারবার আঘাত করতে থাকে। গল্পের শুরু শীতকালের বর্ণনার মধ্য দিয়ে। প্রকৃতিতে যে শীতকাল নির্দয়, তাকে ফুটিয়ে তোলার মধ্য দিয়ে। ‘শীতকাল, ঠান্ডা নামছে হিম, চাঁদ ফুটে আছে নারকেল গাছের মাথায়।’ ...‘আরো হিম নামে।’ এই হিম নামার ভেতর দিয়ে, পুরো শরীর ও মনকে অবশ করে তোলার ভেতর দিয়ে আত্মজার শরীর সামান্য পয়সায় বেচার মধ্য দিয়ে ক্ষুধা নামের দানবকে তাড়িয়ে দেবার যে বর্ণনা, তার মধ্য দিয়ে হাসান আজিজুল হক চেতনাকে জাগিয়ে তোলেন। যে চেতনার প্রবাহ তিনি ছড়িয়ে দেন, তা যেন চালচিত্রের খুঁটিনাটি। একইভাবে তার ‘ভূতের কষ্ট’ গল্পটিকেও যদি পাঠককে আবার মনে করিয়ে দেই, তাহলে পাঠক সেই হাভাতে ভূতের মধ্য দিয়ে খুঁজে পাবেন আত্মজার বৃদ্ধকে, খুঁজে পাবেন উত্তরের সেই ক্ষেতমজুরকেই। 
ভূতের কষ্ট গল্পের হাভাতে ভূত কিন্তু বরাবরের ভূত না। সে কিভাবে ভূত হয়, তার বর্ণনাংশটুকু তুলে ধরছি। ‘সে রাতটা তার খুব মনে পড়ে। তিন ছেলেমেয়ে বউ সুদ্ধ উপোস চলছিলো। আর শালার বৃষ্টি পনের দিনেও ধরে না। সন্ধ্যে নামলো। অন্ধকারের মধ্যে একটানা বৃষ্টি হতে লাগলো। বিদ্যুৎ চমকানি নেই, মেঘ ডাকাডাকি নেই, বাতাসের আওয়াজ নেই, একঘেয়ে ঝম্ ঝম্ বৃষ্টির শব্দ শুধু। শুনতে শুনতে হাভাতের মনে হলো পৃথিবীর কোথাও কোন মানুষ বেঁচে নেই, বেঁচে থাকার দরকারও নেই। বৃষ্টি হতে হতে পৃথিবীটাই গলে ধুয়ে উবে যাবে। ওর নিজের এখন একমাত্র কাজ হচ্ছে, হলায় দা দিয়ে এক এক করে ছেলেমেয়ে তিনটে আর বউটাকে সাবাড় করে দেওয়া।’
হাভাতে কিন্তু কাজটি নিপুনভাবে সম্পন্ন করার জন্য তর সইতে পারে না। তার আগেই সে ঘরের আড়ায় ছেঁড়া চাদর ধরে ঝুলে পড়ে। কিন্তু তার কষ্ট দূর হয় না। কারণ, ভূত হবার নিয়মই এই- যে যে কষ্ট নিয়ে মরেছে, ভূত হয়েও তার সেই কষ্ট বইতে হবে। তবে সুবিধা হলো অন্য কোন কষ্ট থাকবে না। তাই ভূত হয়েও হাভাতের ক্ষুধার কষ্ট গেল না। ভূত হয়ে সে তাই, ভারভারন্ত বউ খুঁজে ফেরে। যে দুপুরে ভরপেটে ভাত খেয়ে একটি পান মুখে দিয়ে শুয়েছে। হাভাতে, তার পেট থেকে খাবার বের করে নিতে পারে। কিন্তু মুসকিল হলো, রোজ এমন হয় না। তাই ভূত হয়েও তাকে কষ্ট করতে হয়। আর যার পেটে খাবার নেই, তার ওপর হাভাতে ভর করলে, ভর করার ক্লান্তি তাকে পেয়ে বসে। যা তাকে নতুন করে মৃত্যুর ঝুঁকিতে ফেলে দেয়। এমনি একদিন অপেক্ষা করতে করতে সে দেখা পায়, তার নিজের বউয়ের। ক্ষিধেয় অস্থির হাভাতে বউয়ের পেটের দিকে তাকিয়ে খুশি হয়, ফোলা পেট তাকে বুঝিয়ে দেয়, বউয়ের পেটে আজ ভালোমন্দ পড়েছে। মুহূর্তেই সে বউয়ের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। তার পেট থেকে সব খাবার ঢুকিয়ে নেয় নিজের পেটে। কিন্তু? গল্পের শেষের বর্ণনাটুকু, ‘হাভাতে ভূত হাঁফাতে হাঁফাতে উঠে পড়ে বউ-এর দিকে তীক্ষè চোখে চেয়ে রইল। তার খেয়াল হলো, ভূত জ্যান্ত মানুষের খাওযা তার পেট থেকে খেয়ে নিতে পাওে। মানুষ তা টের পায় না কিন্তু ভূত ভূতের খাওয়া লুট করতে পারে না তার পেট থেকে। হাভাতে লজ্জায় দুঃখে মিসমার হয়ে আবার নিমগাছের ডালে গিয়ে বসলো।’
হাভাতে যে খাবারের কষ্ট সইতে না পেরে ভূত হয়ে গিয়েছিল, তার বউও ঠিক কদিন পরে সেই কষ্ট নিয়েই ভূত হয়ে যায়। যা জানা ছিলো না হাভাতের।
হাসানা আজিজুল হক জীবনের কথাকার। তার লেখায় তিনি জীবনকে তুলে এনেছেন, জীবনের পর্দা সরিয়ে দেখিয়েছেন আমাদের চোখ বন্ধ করে রাখা দিককে। মানুষের সঙ্গে মানুষের যে দূরত্ব আমরা রচনা করে চলেছি, ভোগাবাদী জীবনের উষ্ণতা দিয়ে, আমাদের রঙিন জগত দিয়ে যতোটা আড়াল করতে চেয়েছি চারপাশকে, হাসান আজিজুল হক তার দায়িত¦ বোধ, তার ঋণ শোধের তাগাদা থেকে সেই আড়ালে থাকা জীবনের গল্পগুলোকেই তুলে এনেছেন। খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে বারবার দেখিয়ে দিয়েছেন আমাদের চোখ বন্ধ করে থাকার নিষ্ঠুরতাকে। সচেতন ভাবে আমরা যে দূরত্ব রচনা করে চলেছি, সেই দূরত্বকে ঘুচিয়ে দিতে বাংলা ছোটগল্পের বরপুত্র আলো হাতে সেতু রচনা করেছেন।  


মামুন রশীদ : কবি, সাংবাদিক
 

সর্বশেষ